WWE-তে রাইব্যাক পেলো এমন একটা সুযোগ, যেটা সাধারনত কেউ পায় না। সে শুধু তার ক্যারিয়ারের পুনরুত্থানই করলো না, তাকে কিছুদিন হিল গিমিকে রেখে আবারো টপ ফেইস বানিয়েই ফেরত আনা হলো। যাকে বলা যায় প্রায় নবজন্ম। নতুনভাবে জন্মগ্রহন করে রাইব্যাককে আগের চেয়ে অনেক বেশী পরিনত মনে হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন কট্টর রাইব্যাক হেইটার ছিলাম। কিন্তু ফিরে আসার পর থেকে মনে হচ্ছে, এই কদিন হিল থেকে সে ঘোড়ার ঘাস কাটেনি, বরং নিজেকে নিয়ে অনেক কাজ করেছে। তার ফলশ্রুতিতেই খুব সম্ভব আবারো এতোবড় সুযোগ। দেখে নেই কোন কোন জায়গায় তার উন্নতি হয়েছে। 

১। তার মাইক স্কিলে খুবই সামান্য উন্নতি হয়েছে। আগে ওপেন মাইক দিয়ে রাখলেও ইদানিং তাকে খুব বেশী কথা বলানো হচ্ছে না। তাই সে দর্শকদের খুব বেশী "বোর" করতেও পারছে না। এতে তার চিয়ার বাড়ছে। আগে মাইক নিয়ে হড়বড় করে কি বলতো, মনে হয় ও নিজেই বুঝতো না। অফ-স্ক্রীনে "আমি সবার সেরা," বা "আমি জানি কি করে বেস্ট হতে হয়" এসব বলাও এখন বন্ধ হয়েছে। কাজেই সে রিয়াল লাইফে যতোই বেকুব হোক না কেনো, দর্শকের কাছ থেকে তা সফলভাবে লুকিয়ে রাখতে শিখেছে।

২। তার পার্সনালিটিতেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সে ইদানিং কম কথা, বেশী হাসাহাসিতে মনোযোগ দিয়েছে। মুখের একপাশ উঁচু করে দাঁত বের করে বিশেষ ধরনের ক্ষনিক ভেটকিটা তাকে অনেক মানিয়েছে, বোঝা যাচ্ছে এটা তার বেশ কষ্ট করে আয়ত্ত করা। এছাড়া ২টা কথার মাঝখানে একবার "ফোঁস" করে মহিষের মতো নিশ্বাস ছাড়ার প্রবনতাও কমেছে। এতে তাকে এখন আর হাস্যকর লাগছে না, বরং একটা টপ ফেইসের মতোই লাগছে।

৩। তার ফিটনেসেও এসেছে পরিবর্তন। আগে রাইব্যাকের কোনো ম্যাচ সর্বোচ্চ ৫ মিনিট স্থায়ী হতো। গোল্ডবার্গকে অনুসরন করে তার ক্যারেক্টার তৈরি করা বলে গোল্ডবার্গের মতো করেই তাকে প্রেজেন্ট করা হতো। কিন্তু ইদানিং সে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ীই ম্যাচ খেলছে। ডমিন্যান্ট ম্যাচ বাদ দিয়ে তাকে কিছু ফিজিক্যাল ম্যাচ খেলতে দেখা যাচ্ছে সিজারো, প্রভৃতি অন্য সফল রিং ওয়ার্কারের সাথে। এতেও তার চিয়ারের সংখ্যা বাড়ছে।

৪। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা (আমার মতে) অথরিটির কাছ থেকেই এসেছে। সেটা হচ্ছে, মাইক দিয়ে তাকে বলানো, যে "আমি নিজেকে ছাড়া আর কারো তোয়াক্কা করি না" (Authority does what best for business, John Cena does what best for the WWE Universe, and Ryback does what best for Ryback)। মানুষ এখন আর নায়কদের পছন্দ করে না, প্রো-রেস্লিং এর সকল জনপ্রিয় লিজেন্ডদের কেউই প্রথাগত জনদরদী ফেইস ছিলেন না। একটা নিউট্রাল, এন্টি হিরো জাতীয় গিমিক মানুষ পছন্দ করে সবচেয়ে বেশী। এই লিস্টে প্রথম নামটা থাকবে স্টোন কোল্ড স্টিভ অস্টিনের, পরেরটা দ্যা রকের, এবং সিএম পাঙ্কের। রক প্রথমে কিছুদিন হিল ছিলেন, অতঃপর ফেইস হলেও তাঁকে সেসময় কখনও জনগনের উদ্যেশ্যে কিছু বলতে দেখা যায়নি। ২০০২ সালে তিনি জনদরদী হওয়ার পরেই তার আকাশ্চুম্বী সাপোর্ট কমতে শুরু করে। সেই হিসেবে আন্ডারটেইকারের ফ্যান সাপোর্টও কিন্তু ঈর্ষনীয়। তিনি শেষের দিকে বেশীরভাগ ফেইস থাকলেও, দর্শকের সাথে একেবারেই মেলামেশা করেননি। তাই তার সাপোর্টও কখনও কমেনি। এই মুহূর্তে ডিন এমব্রোস হচ্ছেন ঠিক এই রকমের একজন নিউট্রাল ফেইস। সাতেও নাই, পাঁচেও নাই, নিজেরটা ঠিক থাকলেই হলো। মনে হচ্ছে, রাইব্যাককে এমনই একজন নিউট্রাল ক্যারেক্টার বানানোর প্রচেষ্টা চলছে। সেক্ষেত্রে সে যদি সারভাইভর সিরিজে হিল টার্নও করে, তবুও সে ফ্যান সাপোর্ট পাবে। আশা করা যায়, ট্রিপল এইচ ও অন্যান্য কর্তাব্যক্তিদের প্রত্যাশামতো রাইব্যাক অচিরেই WWE এর অন্যতম ফেইস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন, যদি কিনা উপরোক্ত ব্যাপারগুলো তিনি মেইনটেইন করে চলতে পারেন, আর অনাবশ্যক কোনো দুর্ঘটনা না ঘটান।


Credit :  AB Hasan Chowdhury

রাইব্যাক এবং তার অবিশ্বাস্য নতুন জীবন...!

WWE-তে রাইব্যাক পেলো এমন একটা সুযোগ, যেটা সাধারনত কেউ পায় না। সে শুধু তার ক্যারিয়ারের পুনরুত্থানই করলো না, তাকে কিছুদিন হিল গিমিকে রেখে আবারো টপ ফেইস বানিয়েই ফেরত আনা হলো। যাকে বলা যায় প্রায় নবজন্ম। নতুনভাবে জন্মগ্রহন করে রাইব্যাককে আগের চেয়ে অনেক বেশী পরিনত মনে হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন কট্টর রাইব্যাক হেইটার ছিলাম। কিন্তু ফিরে আসার পর থেকে মনে হচ্ছে, এই কদিন হিল থেকে সে ঘোড়ার ঘাস কাটেনি, বরং নিজেকে নিয়ে অনেক কাজ করেছে। তার ফলশ্রুতিতেই খুব সম্ভব আবারো এতোবড় সুযোগ। দেখে নেই কোন কোন জায়গায় তার উন্নতি হয়েছে। 

১। তার মাইক স্কিলে খুবই সামান্য উন্নতি হয়েছে। আগে ওপেন মাইক দিয়ে রাখলেও ইদানিং তাকে খুব বেশী কথা বলানো হচ্ছে না। তাই সে দর্শকদের খুব বেশী "বোর" করতেও পারছে না। এতে তার চিয়ার বাড়ছে। আগে মাইক নিয়ে হড়বড় করে কি বলতো, মনে হয় ও নিজেই বুঝতো না। অফ-স্ক্রীনে "আমি সবার সেরা," বা "আমি জানি কি করে বেস্ট হতে হয়" এসব বলাও এখন বন্ধ হয়েছে। কাজেই সে রিয়াল লাইফে যতোই বেকুব হোক না কেনো, দর্শকের কাছ থেকে তা সফলভাবে লুকিয়ে রাখতে শিখেছে।

২। তার পার্সনালিটিতেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সে ইদানিং কম কথা, বেশী হাসাহাসিতে মনোযোগ দিয়েছে। মুখের একপাশ উঁচু করে দাঁত বের করে বিশেষ ধরনের ক্ষনিক ভেটকিটা তাকে অনেক মানিয়েছে, বোঝা যাচ্ছে এটা তার বেশ কষ্ট করে আয়ত্ত করা। এছাড়া ২টা কথার মাঝখানে একবার "ফোঁস" করে মহিষের মতো নিশ্বাস ছাড়ার প্রবনতাও কমেছে। এতে তাকে এখন আর হাস্যকর লাগছে না, বরং একটা টপ ফেইসের মতোই লাগছে।

৩। তার ফিটনেসেও এসেছে পরিবর্তন। আগে রাইব্যাকের কোনো ম্যাচ সর্বোচ্চ ৫ মিনিট স্থায়ী হতো। গোল্ডবার্গকে অনুসরন করে তার ক্যারেক্টার তৈরি করা বলে গোল্ডবার্গের মতো করেই তাকে প্রেজেন্ট করা হতো। কিন্তু ইদানিং সে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ীই ম্যাচ খেলছে। ডমিন্যান্ট ম্যাচ বাদ দিয়ে তাকে কিছু ফিজিক্যাল ম্যাচ খেলতে দেখা যাচ্ছে সিজারো, প্রভৃতি অন্য সফল রিং ওয়ার্কারের সাথে। এতেও তার চিয়ারের সংখ্যা বাড়ছে।

৪। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা (আমার মতে) অথরিটির কাছ থেকেই এসেছে। সেটা হচ্ছে, মাইক দিয়ে তাকে বলানো, যে "আমি নিজেকে ছাড়া আর কারো তোয়াক্কা করি না" (Authority does what best for business, John Cena does what best for the WWE Universe, and Ryback does what best for Ryback)। মানুষ এখন আর নায়কদের পছন্দ করে না, প্রো-রেস্লিং এর সকল জনপ্রিয় লিজেন্ডদের কেউই প্রথাগত জনদরদী ফেইস ছিলেন না। একটা নিউট্রাল, এন্টি হিরো জাতীয় গিমিক মানুষ পছন্দ করে সবচেয়ে বেশী। এই লিস্টে প্রথম নামটা থাকবে স্টোন কোল্ড স্টিভ অস্টিনের, পরেরটা দ্যা রকের, এবং সিএম পাঙ্কের। রক প্রথমে কিছুদিন হিল ছিলেন, অতঃপর ফেইস হলেও তাঁকে সেসময় কখনও জনগনের উদ্যেশ্যে কিছু বলতে দেখা যায়নি। ২০০২ সালে তিনি জনদরদী হওয়ার পরেই তার আকাশ্চুম্বী সাপোর্ট কমতে শুরু করে। সেই হিসেবে আন্ডারটেইকারের ফ্যান সাপোর্টও কিন্তু ঈর্ষনীয়। তিনি শেষের দিকে বেশীরভাগ ফেইস থাকলেও, দর্শকের সাথে একেবারেই মেলামেশা করেননি। তাই তার সাপোর্টও কখনও কমেনি। এই মুহূর্তে ডিন এমব্রোস হচ্ছেন ঠিক এই রকমের একজন নিউট্রাল ফেইস। সাতেও নাই, পাঁচেও নাই, নিজেরটা ঠিক থাকলেই হলো। মনে হচ্ছে, রাইব্যাককে এমনই একজন নিউট্রাল ক্যারেক্টার বানানোর প্রচেষ্টা চলছে। সেক্ষেত্রে সে যদি সারভাইভর সিরিজে হিল টার্নও করে, তবুও সে ফ্যান সাপোর্ট পাবে। আশা করা যায়, ট্রিপল এইচ ও অন্যান্য কর্তাব্যক্তিদের প্রত্যাশামতো রাইব্যাক অচিরেই WWE এর অন্যতম ফেইস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন, যদি কিনা উপরোক্ত ব্যাপারগুলো তিনি মেইনটেইন করে চলতে পারেন, আর অনাবশ্যক কোনো দুর্ঘটনা না ঘটান।


Credit :  AB Hasan Chowdhury